রেকর্ডিয় মালিকানা স্বত্বের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল এবং (ডিসিআর) প্রদানের ক্ষেত্রে জালিয়াতির প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট ২০২৫) সকাল ১১টায় কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী আলহাজ্ব শেখ মুনছুর রহমান।
তিনি তার পারিবারিক রেকর্ডীয় সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ এনে এর সুষ্ঠু তদন্ত এবং ন্যায়বিচার দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আলহাজ্ব শেখ মুনছুর রহমান জানান, খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার কয়রা মৌজার সিএস ২৫৫ খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক বরদা কান্ত খা ও জ্ঞানদা কান্ত খা-এর নিকট থেকে তারা ক্রয় সূত্রে ১৪.১৫ একর সম্পত্তির মধ্য থেকে ৫.৬৬২৫ সম্পত্তির বৈধ ক্রেতা। এই সম্পত্তি সিএস ২৫৫ খতিয়ানের ধারাবাহিকতায় এসএ ৩৯৩ খতিয়ানে যথাক্রমে ৩৯৩২, ৩৯৩৪ এবং ৪১০৪ দাগে রেকর্ডভুক্ত। প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ বছর ধরে তারা এই জমি দলিল এবং নামজারির মাধ্যমে কর খাজনা প্রদান করে ভোগদখল করে আসছেন।
ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, তাদের এই সম্পত্তির মধ্যে ১০৮/৭৭-৭৮ সালে ভিপি গেজেটে ৩৯৩২ এবং ৪১০৪ দাগ দুটি "খ" তালিকাভুক্ত হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালে আবারো একই সম্পত্তি জ্ঞানদা কান্ত খা এর অংশ ভিপি ক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় তবে ৩৯৩৪ দাগটি গেজেটে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তার বর্গাদার রাজনৈতিক প্রভাব এবং আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সেই সম্পত্তি হতে দুই একর সম্পত্তি ডিসিআর প্রাপ্ত হন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, জমির মালিকানা ও ভিপি সম্পত্তি আলাদাভাবে চিহ্নিত না করেই এবং মালিককে কোনো নোটিশ না দিয়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা গৌর কুমার মণ্ডল মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বর্গাদারের পক্ষে প্রতিবেদন জমা দেন। এর ভিত্তিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গেজেট বহির্ভূত ৩৯৩৪ দাগটিও ডিসিআরভুক্ত করে আমার বর্গাদারকে ইজারা প্রদান করেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এই জমিতে শেখ মুনছুর রহমানের বাড়িঘর ও মাছের ঘের রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় তার শরিক কহিনুর শেখ হাইকোর্টে রিট পিটিশন (নং ৬২০৪/২০২৩) দায়ের করে স্থিতাবস্থা আদেশ পেয়েছেন। কিন্তু তার নিজের নামে রেকর্ডীয় সম্পত্তি হওয়া সত্ত্বেও, কিছু অসাধু চক্র তার বর্গাদারকে ব্যবহার করে অবৈধ দখলের পাঁয়তারা করছে।
শেখ মুনছুর রহমান জানান, তিনি এ বিষয়ে বিজ্ঞ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌঃকাঃবি আইনের ১৪৫ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চেয়েছেন। আদালত সংশ্লিষ্ট ইউএলএও-কে দখল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই একই ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবারও পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, এই কর্মকর্তা এর আগেও বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানি করেছেন এবং টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান এবং সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন জাতির বিবেক হিসেবে এই অন্যায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অতীতের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের মতো এই ঘটনাও আইনের জাঁতাকলে পিষ্ট হতে চলেছে। তাই তিনি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন এবং পূর্বের বাতিল হওয়া ডিসিআর পুনরায় তার অনুকূলে ও তার রেকর্ডিও খাস দলীয় সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন। অবৈধ ভূমি দখলকারী, মামলাবাজ ,দাঙ্গাবাজ কর্তৃক হয়রানি বন্ধ ও ক্ষতি পূরণের জোর দাবি জানান।
এ জাতীয় আরো খবর..