সুন্দরবনের সংরক্ষিত অভয়ারণ্যে অবৈধভাবে মাছ ধরার সুযোগ দিতে জেলেদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ গ্রহণ এবং পরে সেই জেলেদেরই মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর মতো অভিযোগ উঠেছে খুলনা রেঞ্জের ভোমরখালী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে। অগ্রিম টাকা পরিশোধ করার পরও প্রতারণা করে সাত জন গরিব জেলেকে আটক করে বন আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জেলেরা।
সোমবার( ৬ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলেদের পক্ষে ৪নং কয়রা গ্রামের মোঃ রজব আলী এই অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে রজব আলী দাবি করেন, ওসি আব্দুল হাকিম দীর্ঘদিন ধরে ১০টি জেলে নৌকাকে অভয়ারণ্যে প্রবেশের সুযোগ দিতেন। বিনিময়ে প্রতি দশ দিনে (এক গোনে) নৌকা প্রতি ১০ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ টাকা অগ্রিম নিতেন। তিনি জানান, ওসি এই ঘুষের টাকার একটি অংশ 'ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের' দিতে হয় বলে দাবি করতেন। তবে সম্প্রতি ওসি আব্দুল হাকিম অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে অন্য দালালচক্রের জেলেদের সুযোগ দিতে শুরু করেন এবং তাঁর দলের জেলেদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেন।
রজব আলীর অভিযোগ, এর আগে টাকা লেনদেনের প্রমাণ হিসেবে মহাজনের কাছে থাকা হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের স্ক্রিনশট থাকলেও, ওসি প্রতারণার পর সেই কথোপকথন মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অগ্রিম টাকা পরিশোধ থাকা সত্ত্বেও গত ২ অক্টোবর ওসি আব্দুল হাকিম তাদের দলের সাতজন জেলেকে আটক করে আরও টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় দুই দিন আটকে রেখে গত ৫ অক্টোবর তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রজব আলী আরও অভিযোগ করেন, আটক জেলেদের নৌকায় পাঁচশ কেজির বেশি মাছ ছিল, কিন্তু ওসি হাকিম আদালতে মাত্র ৫০ কেজি দেখিয়ে বাকি মাছ আত্মসাৎ করেছেন। তিনি ওসি আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও কারাগারে পাঠানো গরিব জেলেদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে বন কর্মকর্তার কাছে জানার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ জাতীয় আরো খবর..